Technology

Latest News:

Tuesday, October 10, 2017

বেয়ারস্টোর বাবার আত্মহত্যা ও ক্যান্সার আক্রান্ত মায়ের লড়াইয়ের গল্প


বাবা ছিলেন ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের ক্রিকেটার। দেশের হয়ে টেস্টও খেলেছেন। ছেলে জনি বেয়ারস্টকে ছোট থেকেই নিরন্তর উৎসাহ জুগিয়ে গেছেন খেলাধুলায়। কিশোর বয়সে ক্রিকেট ও ফুটবল দুটোই পছন্দ করতেন ইংলিশ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান বেয়ারস্টো। বাবা চাইতেন, ছেলে যেটা পছন্দ করবে সেটাতেই তার যাত্রা শুরু করবে। সবকিছু ঠিক চলছিল। কিন্তু হঠাৎ অজানা এক ঝড়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে গেল সুখের সংসার!
বেয়ারস্টো যখন ছোট, তখন তার মায়ের ক্যান্সার ধরা পড়ে। চিকিৎসার সামর্থ্য ছিল না। হতাশ হয়ে পড়েছিলেন বাবা। আজ থেকে ১৯ বছর আগে একদিন বাড়ি এসে ৮ বছর বয়সী ছেলেটি দেখল, বাবা ডেভিড সিলিংয়ে ঝুলে আছেন! দেহে প্রাণ নেই! 
বাবা হাল ছেড়ে দিলেও হাল ছাড়লেন না বেয়ারস্টোর ক্যান্সার আক্রান্ত মা জ্যানেট। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশি লড়াই শুরু করলেন ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ করার।
ছেলে বাবার পথ অনুসরণ করে ক্রিকেট মাঠেই তার জীবন গড়তে চেয়েছিল। মা বাধা দেননি। বাবার মতোই ইয়র্কশায়ারে খেলছেন বেয়ারস্টো। বাবার কাছ থেকে তাকে হাতে-কলমে ক্রিকেট শেখার সুযোগ না পেলেও বেয়ারস্টোর উইকেটকিপিং প্রায় তার বাবার মতোই।
মায়ের সঙ্গে জনি বেয়ারস্টো। ছবি : ইন্টারনেট
প্রায় ২০ বছর হয়ে গেল বাবার মৃত্যু নিয়ে চুপ করে ছিল বেয়ারস্টো পরিবার। শেষ পর্যন্ত বেয়ারস্টো তার আত্মজীবনী 'এ ক্লিয়ার ব্লু স্কাই' এ বিষয়টি উল্লেখ করেন। বইটিতে তিনি মায়ের কিছু কথা তুলে ধরেছেন, 'ক্যান্সার ধরা পড়ার পর সন্তানদের জন্য আমাকে শক্ত হওয়ার দরকার ছিল। এরপর ডেভিডও চলে গেল।  সে এটা কেন করেছিল, তা হয়তো কখনোই জানতে পারব না। এ জন্য নিজেকে অপরাধী ভাবা যেতে পারে, দোষারোপ করা যেতে পারে, কিন্তু পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই। আমাকে সামনে তাকাতেই হতো। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ছোট ছোট লক্ষ্য স্থির করতে হয়, আমরা ঠিক সেটাই করেছি, কখনো বেশি দুরে তাকাইনি। '
তিন সন্তান জনি, বেকি আর অ্যান্ড্রু (বৈমাত্রেয় ভাই) নিয়ে জীবনসংগ্রামে জ্যানেট সফল হয়েছেন। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কিছুটা হলেও জয়ী হয়ে এখনো বেঁচে আছেন তিনি। ছেলে বেয়ারস্টো মাকে কোনোভাবে কষ্ট দিতে চান না। বইতে লিখেছেন, 'বাবার মৃত্যু কেন হয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন করার কিছু নেই। তাহলে ঘুরে দাঁড়ানো যাবে না। বাবা হারানোর কষ্টকে প্রাধান্য দিলে মায়ের স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ত। তাই বাবার মৃত্যু ভুলে আমি মায়ের স্বাস্থ্যের দিকেই নজর দিয়েছিলাম। '
ইংল্যান্ডের হয়ে ৪ টেস্ট ও ২১ ওয়ানডে খেলেছিলেন বাবা ডেভিড বেয়ারস্টো। ইয়র্কশায়ারের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৪ হাজার রানের পাশাপাশি ১০৯৯ ডিসমিসাল রয়েছে ডেভিডের। আর জনি বেয়ারস্টো এখন ইংল্যান্ড জাতীয় দলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।


No comments:

Post a Comment

Copyright © 2014 Bd Sports All Right Reserved
^